Public Administration Subject Review-লোক প্রশাসন সাবজেক্ট রিভিউ

Public Administration Subject Review

এই বিভাগে কেন পড়ব/কেন পড়ব না? এখানে পড়লে কি ধরনের চাকুরী হবে? এই সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে লোক প্রশাসন আসলে কি সেই ব্যাপারটি পরিষ্কার করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছি . . . 

লোক প্রশাসন বিভাগটি কেমন? 

A. বিভাগ হিসেবে এই সাবজেক্টটি কিছুটা আনকমন এবং স্কুল - কলেজের গন্ডির মধ্যে কোথাও পাব্লিক এডমিনিস্ট্রেশন নামের কিছু ছিলো না বলে অনেকেই বিভাগটির সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা রাখেন না। প্রথমেই বলা প্রয়োজন যে, পাব্লিক কথাটির অর্থ হচ্ছে গভর্মেন্ট, এই যে আপনি পাব্লিক ভার্সিটি অর্থাৎ গভর্মেন্ট ভার্সিটিতে পড়ছেন/পড়তে যাচ্ছেন সেই গভর্মেন্ট। সুতরাং পাব্লিক এডমিনিস্ট্রেশন মানে হচ্ছে গভর্মেন্ট এডমিনিস্ট্রেশন। 

সরকারের পলিসি প্ল্যানিং থেকে পলিসি ফর্মুলেশন, সরকারি প্রশাসনের রক্ষনাবেক্ষন এবং ম্যানেজমেন্ট ,রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আইন ইত্যাদি হচ্ছে লোক প্রশাসনের ফোকাস এরিয়া। মোটা দাগে বলতে গেলে লোক প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সরকার এবং সরকারের কার্যক্রমের এমন কোন বিশেষ জায়গা নেই যেটি লোক প্রশাসনের বহির্ভূত। 

যেকোন প্রতিষ্ঠানের সফলতা / ব্যর্থতা নির্ভর করে একজন প্রশাসকের উপরে। একজন দক্ষ প্রশাসককে তাই হতে হয় একজন মাল্টিডিসিপ্লিনারি মানুষ। তাই পাব্লিক এডমিনিষ্ট্রেশন বিভাগে পড়ানো হয় কিভাবে একজন দক্ষ প্রশাসক হতে হয়; স্বভাবতই পাব্লিক এডমিনিষ্ট্রেশন বিভাগে পড়লে আপনাকে শিখতে হবে সমাজবিজ্ঞান, ম্যানেজমেন্ট সহ সংশ্লিষ্ট প্রায় অধিকাংশ মৌলিক বিষয়। 

লোক প্রশাসন পড়ে কি হওয়া যায় ? 

এবার চাকুরীর বাজারে আসা যাক। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে এডমিনিস্ট্রেশন। সুতরাং, পাব্লিক এডমিনিশট্রেশন এর পরিসর অত্যন্ত বিস্তৃত।বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবজেক্টগুলোর মধ্যে একমাত্র পাব্লিক এডমিনিস্ট্রেশন সাবজেক্টের নামেই একটি মন্ত্রনালয় আছে এবং সেই জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে (Ministry of Public Administration) পাব্লিক এডমিনিস্ট্রেশন পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে লোভনীয় পদে চাকুরীর সুযোগ। 

এছাড়া বিশেষ সুযোগ রয়েছে সরকারি কর্ম কমিশনে। বিসিএসে যতগুলো ক্যাডার রয়েছে এর মধ্যে প্রশাসন, পুলিশ, সিভিল সার্ভিস ক্যাডারে চাকরি পান এ বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। এ ছাড়া দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, প্রশাসন, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ইত্যাদি বিভাগে তাঁরা অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন।বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানী, মানবাধিকার সংস্থা,বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন,ব্যাংক, বিমা, বিভিন্ন এনজিওতে এ বিভাগের ছেলেমেয়েরা ভালো বেতনে কাজ করছেন। 

অনেকে আবার কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা পেশায় চাকরি করছেন। দেশের বাইরে যেমন যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে এ বিভাগের ডিগ্রিধারীরা এখন ভালো বেতনে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগ

শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও রয়েছে এর বিশেষ কদর। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালে লোক প্রশাসন বেশ সম্ভাবনাময় একটি বিভাগ। এখানে তিনটি বর্ষে প্রায় ১৮০ জন ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। বিভাগটি এখন একটি প্রতিষ্ঠিত বিভাগ হয়ে ওঠার দ্বারপ্রান্তে। এবছর যারা ভর্তি হচ্ছে তাদের সাথে বিভাগটির চারটি বর্ষ পূর্ন হচ্ছে। 

এই বিভাগে রয়েছে প্রতিশ্রুতিশীল, মেধাবী গোল্ড মেডেলিস্ট শিক্ষক শিক্ষিকা। বিভাগটির একটি বড় আকর্ষন হচ্ছে ছাত্র - শিক্ষক সম্পর্ক। বিভাগটিতে রয়েছে দুই দুইটি লাইব্রেরী। রয়েছে 'সৃজন ' এবং 'সিনেপ্যাড' এর মত দুইটি সংগঠন। সৃজনের আয়জনে বিভাগটিতে গ্রাজুয়েট সেমিনারের আয়োজন করা হয়। 

সিনেপ্যাড মূলত ডকুমেন্টারি এবং ফিল্ম নিয়ে কাজ করে। এছাড়া মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথী শিক্ষকদের পদচারনায় মুখর হয়ে থাকে লোক প্রশাসন বিভাগ। মাঝেমধ্যে তাদের কাজের উপর আয়োজন করা হয় সেমিনারের। 

এছাড়া স্পোর্টস, কালচারাল প্রোগ্রাম,সোশ্যাল ওয়ার্ক ইত্যাদিতে লোক প্রশাসন বিভাগটি বেশ সক্রিয়। এডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিং এ যতগুলো বিভাগ রয়েছে, তারমধ্যে পাব্লিক এডমিনিস্ট্রেশন বিভাগটি সবচেয়ে সুন্দরভাবে সাজানো এবং গোছানো এমন দাবী করলে অত্যুক্তি হবে না। সবমিলিয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোর মধ্যে লোক প্রশাসন বিভাগ নিজেকে অন্যতম সেরা একটি বিভাগ হিসেবে দাবী করার যোগ্যতা রাখে। 

Public Administration Subject Review

পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন কি ? 

Public Administration সংক্ষেপে 'Public Add.' বাংলায় বললে 'লোক প্রশাসন'। 

লোক প্রশাসন সাবজেক্টটি সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই তেমন কোনো ধারণা নেই। আবার অনেকেই এই তুমুল সম্ভাবনাময়ী সাবজেক্টটি সম্পর্কে অনেক ভুল ধারনা নিয়ে বসে থাকেন, সঠিক জিনিসগুলো আমরা জানি না। না জানাটাই স্বাভাবিক, কেননা এই সাবজেক্টটি সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। নেই কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত কোনো কলেজেও এটি অধ্যয়ন করা হয় না। 

শুধুমাত্র যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন সাবজেক্ট রয়েছে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও এই সাবজেক্ট সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা বাদে অন্যদের এই সাবজেক্ট সম্পর্কে ধারনা একদমই কম। 

লোক প্রশাসন সাবজেক্টটি কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় ? 

বাংলাদেশের কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, যেমন- 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, 

 বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় 

BUP, SUST, 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি অনেকগুলা বিশ্ববিদ্যালয়েরই সমাজবিজ্ঞান অনুষদে এই ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের (Faculty of Social Science) উচ্চ পর্যায়ের সাবজেক্ট হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। 

এই Subject থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা BSS (Bachelor of Social Science) এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা MSS (Master of Social Science) ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন। শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও রয়েছে এর বিশেষ কদর। তাই এই বিষয়ে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা সকলের কাছে একটু অন্যরকম দৃষ্টিতে থাকে এবং আলাদা সম্মান পায়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের বিচরণ লক্ষ্যনীয়। আমরা যারা এই সাবজেক্টের ছাত্র তারাও আরেকবার আমাদের সম্ভাবনাগুলো দেখে নিতে পারি। 

লোক প্রশাসন সাবজেক্ট রিভিউ

লোক প্রশাসনের পরিধি ও বিষয়বস্তু আলোচনা কর 

সরকারের Policy Planning থেকে Policy Formulation, সরকারি প্রশাসনের রক্ষনাবেক্ষন ও ম্যানেজমেন্ট, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আইন ইত্যাদি হচ্ছে লোক প্রশাসনের ফোকাস এরিয়া। সহজ কথায় বলতে গেলে, লোক প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সরকার এবং সরকারের সার্বিক কার্যক্রম। সরকারী কার্যক্রমের এমন কোন বিশেষ জায়গা নেই যেটি লোক প্রশাসনের আলোচ্য বিষয়ের বাহিরে। এর পরিধি অনেকটা বিস্তৃত। 

যেহেতু এটি একটি Multidimensional Subject সেহেতু এখানে Non major course হিসেবে পড়ানো হয় 

English Language, 

Fundamentals of Economics, 

Sociology, 

Application of Computer, Principles of Accounting, 

Human Resource Management (HRM) etc. 

সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। 

একটি প্রবাদ আছে, ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্ররা দেশ বানায়, মেডিকেলের ছাত্ররা দেশ বাঁচায় আর লোক প্রশাসনের ছাত্ররা দেশ চালায়।। যাদের কিনা বলা হয় 'Navigators of the Nation'। 

Public Administration বা লোক প্রশাসন সাবজেক্টের নামে একটি মন্ত্রণালয় আছে এবং সেই জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে (Ministry of Public Administration) লোক প্রশাসন পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে লোভনীয় পদে চাকুরীর সুযোগ। 

ঢাকার অদূরে সাভারে অবস্থিত Bangladesh Public Administration Training Centre (BPATC) [যেখানে বিসিএস এডমিন ক্যাডারদের মৌলিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়] সেখানেও রয়েছে এই সাবজেক্টের শিক্ষার্থীদের চাকুরির সুযোগ। এছাড়া বিশেষ সুযোগ রয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন তথা PSC তে। বিসিএসে যতগুলো ক্যাডার রয়েছে এর মধ্যে প্রশাসন, পুলিশ সহ অন্যান্য সিভিল সার্ভিস ক্যাডারে চাকরি পায় এ বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। 

বর্তমানে দেশে বিভিন্ন সচিবালয়ে কর্মরত উচ্চপদস্থ বহু সচিব এই লোক প্রশাসন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র। এ ছাড়া দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, প্রশাসন, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ইত্যাদি বিভাগে তাঁরা অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানী, মানবাধিকার সংস্থা,বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন, ব্যাংক, বিমা, বিভিন্ন এনজিওতে এ বিভাগের ছেলেমেয়েরা ভালো বেতনে কাজ করছেন। 

অনেকে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা পেশায় চাকরি করছেন। দেশের বাইরে যেমন যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে এ বিভাগের ডিগ্রিধারীরা এখন ভালো বেতনে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাছাড়া বিসিএস প্রশাসন পাওয়া ক্যাডাররা সরকারিভাবে স্কলারশিপ নিয়ে বাইরের দেশে যখন যায় তখন কিন্তু লোক প্রশাসনের উপরই পড়তে যায়। প্রতিটা সেক্টরই মোটামুটিটিভাবে এই সাব্জেক্টের জন্য উন্মুক্ত। 

হাসপাতালে জব করবেন? 

 - তাও আছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা নামে সুন্দর একটি পদ।

বাইরে যাবেন? 

- লোক প্রশাসন নিয়ে প্রায় সবগুলো দেশেই যাওয়া যায়। 

বিসিএস? 

 - এখানে লোক প্রশাসনের শিক্ষার্থীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

রেডিও টেলিভিশন? 

- এখানেও লোক প্রশাসনের শিক্ষার্থীরা দখল করে রেখেছে ।

প্রাইভেট সেক্টরে? 

 - প্রায় প্রতিটা কোম্পানীতেই HR Officer নামে রয়েছে সম্মানীয় পদ, যেখানে apply করলে লোক প্রশাসন আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে। 

অর্থাৎ প্রায় সব ক্ষেত্রেই, লোক প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে যথেষ্ট সুযোগ । 

এজন্যই বিশিষ্ট লোক প্রশাসনবিদরা বলেন , 

দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত মানুষ লোক-প্রশাসনের আওতাভুক্ত। লোক প্রশাসন সাবজেক্টের কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থীর পরিচয় এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যারা এই সাবজেক্ট থেকে পড়াশুনা করে আজ সাফল্যের সাথে কর্মজীবন অতিবাহিত করছেন বা করেছেন। যারা লোক প্রশাসনের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক ও অনুরাগীদের কাছে অনুপ্রেরণার মশাল হতে পারেন। 

১. সজীব ওয়াজেদ জয় : যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Public Administration সাবজেক্ট নিয়ে Post graduation কমপ্লিট করেন। তিনি বর্তমানে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা। 

২. বান কি মুন : যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন এফ কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্ট থেকে ১৯৮৫ সালে লোকপ্রশাসনে Post graduation ডিগ্রি লাভ করেন৷ যিনি সারা পৃথিবীর অভিভাবক সংস্থা তথা জাতিসংঘের ৮ম মহাসচিব হিসেবে ২০০৭ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৯ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ভালো থাকুক লোক প্রশাসন পরিবারের সকল সদস্য যাদের হাত ধরেই গড়ে উঠবে আগামীর পৃথিবী।

পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন যারা পড়ে তাদের বলা হয় "Navigator of the Nation." ব্রিটিশ শাসন সেই কবেই লুপ্ত হয়ে গেছে,তবে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের শাসন লুপ্ত হয় নাই। কাজেই শাসক হওয়ার ইচ্ছা থাকলে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনই হতে পারে আপনার প্রথম চয়েজ। 

পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন সাবজেক্ট পড়ালেখার ধরন

চার বছরের অনার্স কোর্সে এই সাবজেক্টে এডমিনিস্ট্রেশন এর যাবতীয় খুঁটিনাটি পড়ানো হয়।শাসক হতে হলে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংবিধান,সমাজব্য বস্থা,আইন,দেশের সাথে অন্যান্য দেশের সম্পর্ক,দেশের প্রশাসনিক ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হয়। 

এজন্যে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন এর শিক্ষার্থীদের, 

Political Science, Economics, Constitution, Sociology, Constitutional Law, International Relations Banking, Management এই সাবজেক্টগুলাও পড়তে হয়। একইসাথে কমার্সের কিছু মৌলিক সাবজেক্ট এই সাবজেক্টগুলাও পড়তে হয়। 

বিভিন্ন সাবজেক্টের সমষ্টি নিয়ে লোকপ্রশাসনের সিলেবাস হলেও সিলেবাসটা মোটেও বোরিং বা একঘেয়ে না। এটি মূলত প্র্যাক্টিক্যাল একটা সাবজেক্ট।আর কোর্সভূক্ত টপিকগুলাও অনেক ইন্টারেস্টিং আর সময়োপযোগী। 

পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন রেজাল্ট

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসনের সর্বোচ্চ সিজিপিএ-৩.৮২। উনি এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক। কেউ যদি চার বছরের অনার্স লাইফে এভারেজ ৩.৫০ রেজাল্ট করতে পারে,ধরে নেয়া যায় তার শিক্ষক হওয়ার সম্ভাবনা ৯০%। সোশ্যাল সায়েন্সের অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট গুলোর মতোই ভালো রেজাল্ট বলতে সিজিপিএ-৩ থেকে ৩.৫ পাওয়াকে বোঝায়।বেশীরভাগে রই এভারেজ রেজাল্ট থাকে ৩ থেকে ৩.২ এর মধ্যে। 

লোক প্রশাসনে সেশনজট ? 

এই ডিপার্টমেন্ট এ সেশান জট বলতে গেলে নেই-ই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ব্যাচগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র ২০১৩-১৪ ব্যাচটাই সেশান জটে পড়েছে, বাকি ব্যাচগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই আছে। পরীক্ষা ঠিক সময়েই হয়। কাজেই অনার্স-মাস্টার্স মিলিয়ে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ বছরেই লেখাপড়ার পাঠ চুকানো সম্ভব। আমি জাবি থেকে চার বছরে শেষের আগেই অনার্স কমপ্লিট করি ২০১৯ সালে। 

লোক প্রশাসন চাকরিক্ষেত্র ? কোথায় কোথায় চাকরি করা যায়ঃ

★Multinational Companies,NGO,বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানীতে লোকপ্রশাসনের ভালো ভালো চাকুরী আছে। 

★প্রাইভেট ব্যাংকগুলাতে HR বা Human Resource Department নামে একটি শাখা আছে,ওই শাখাতে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন এর শিক্ষার্থীদেরই রাজত্ব। 

★সরকারি বিভিন্ন সংস্থা আর ব্যাংকে চাকুরী তো সাথে আছেই। 

★চার বছরের একাডেমিক পড়াশোনায় লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থীদের বিসিএসের প্রিপারেশান অনেকটাই হয়ে যায়, কারণ সাবজেক্টটার বেশীরভাগ টপিকই বিসিএসের সিলেবাস রিলেটেড। কাজেই যাদের বিসিএস টার্গেট,লোকপ্রশাসন তাদের জন্যে বেস্ট চয়েজ। বিসিএস (প্রশাসন) -এ লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থীদের রাজত্ব সবসময়েই। এমনকি যারা বিসিএস দিয়ে প্রশাসনিক ক্যাডার হয়, তাদের লোকপ্রশাসন নিয়ে বছরখানেক পড়াশোনা করতে হয়- কাজেই এদিক দিয়েও আপনি এগিয়ে থাকবেন।

আপনার চ্যালেঞ্জ নিতে ভালো লাগে, দেশে ঘটে যাওয়া সমসাময়িক যাওয়া ব্যাপারগুলোতে দারুণ আগ্রহ? সিস্টেমের ভেতরে ঢুকে সিস্টেম পরিবর্তনে আগ্রহী,ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বপ্ন আছে? লোকপ্রশাসন ডিপার্টমেন্ট এ আপনাকে স্বাগতম। 

 শাসক হওয়ার ইচ্ছা থাকলে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনই (Public Administration) হওয়া উচিত আপনার প্রথম চয়েজ। রাজনীতিবিদরা সংসদ সদস্য হন ,কথিত শাসকও হন। পার্লামেন্ট এ বসে আইন বানান।জনগনের সেবার জন্য আইন বানান। রাষ্ট্রপরিচালনার জন্য আইন ও নিয়ম নীতি আছে। বাট এগুলোর প্রয়োগ রাজনীতিবিদ রা করেন না। মুখে বলা পর্যন্তই। শাসন কার্য পরিচালনা ও বাস্তবায়ন যারা করেন তারাই হলেন আসল হিরো। আর এরাই পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন এর মানুষ জন। 

বি.সি.এস দিয়ে এডমিন ক্যাডার হয়ে, হয়ে যাওয়া যায় জনগনের আসল শাসক

The more specific term “public management” refers to ordinary, routine, or typical management that aims to achieve public good. 

তার মানে শাসক হওয়ার ইচ্ছা থাকলে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনই হওয়া উচিত আপনার প্রথম চয়েজ।চার বছরের একাডেমিক পড়াশোনায় লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থীদের বিসিএসের প্রিপারেশান অনেকটাই হয়ে যায়,কারণ সাবজেক্টটার বেশীরভাগ টপিকই বিসিএসের সিলেবাস রিলেটেড। কাজেই যাদের বিসিএস টার্গেট,লোকপ্রশাসন তাদের জন্যে বেস্ট চয়েজ।বিসিএস(প্রশাসন) -এ লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থীদের দাপট সেই প্রথম থেকেই। 

আরেকটা বিষয় যারা বিসিএস দিয়ে প্রশাসনিক ক্যাডার হয়,তাদের লোকপ্রশাসন নিয়ে বছরখানেক পড়াশোনা করতে হয়-কাজেই এদিক দিয়েও আপনি এগিয়ে থাকবেন অন্য ক্যাডার অপেক্ষা। 

সংক্ষেপে বললে সিস্টেমের ভেতরে ঢুকে সিস্টেম পরিবর্তনে আগ্রহী,ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বপ্ন বা ইচ্ছা থাকলে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন আপনার জন্য বেস্ট একটি অপশন। 

অ্যাডমিন ক্যাডারের সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে ভ্যারিয়েশন, এই ক্যাডারের লোকজন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পান, এমনকি চাকরি শেষ হলে যোগ্যতা ও দক্ষতার (ও রাজনৈতিক) ভিত্তিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও এরা এগিয়ে (যেমন পিএসসি’র মেম্বার/চেয়ারম্যান )। 

এখানে আপনাকে আরো পড়তে হবে microeconomic issues (markets, rationing mechanisms, etc.) এবং macroeconomic issues (e.g., national debt). 

প্রশাসকরা হল মাল্টিডিসিপ্লিনারি মানুষ। তাই পাব্লিক এডমিনিষ্ট্রেশন বিভাগে পড়ানো হয়

কিভাবে একজন দক্ষ প্রশাসক হতে হয়

স্বভাবতই পাব্লিক এডমিনিষ্ট্রেশন বিভাগে পড়লে আপনাকে শিখতে হবে সমাজবিজ্ঞান, ম্যানেজমেন্ট সহ সংশ্লিষ্ট প্রায় অধিকাংশ মৌলিক বিষয়। প্রাইভেট ব্যাংকগুলাতে HR বা Human Resource Department এ পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন এর শিক্ষার্থীরাই বেশি স্কোপ পায়। Multinational Companies, NGO,বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানীতে লোকপ্রশাসনের ভালো ভালো চাকুরী আছে।

সরকারি বিভিন্ন সংস্থা আর ব্যাংকে চাকুরী তো সাথে আছেই। এরপর বি সি এস হয়ে গেলেই অবারিত সুযোগ রয়েছে আপনার জন্য । মোটামুটি ৫-৬ বছর পর UNO হওয়া যায়, আর একজন UNO কে উপজেলা পর্যায়ের সরকার নিয়োজিত ‘রাজা’ বললে মনে হয় কেউ কস্ট পাবে না

কারণ UNO হলে বাংলো ও গাড়ি সুবিধা পাওয়া যায়, উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান/ সেমিনার/কর্মশালা ইত্যাদিতে গেস্ট/চীফ গেস্ট হিসেবে যাওয়া লাগে, উপজেলা পর্যায়ে ক্ষমতার ব্যবহার ব্যাপক; ডিসি’রা জেলা লেভেলের প্রশাসক, ডিসি’র কাজ ও সুবিধা সমূহ আশা করি সবাই জানেন। মানে সম্মান আর সম্মান।

 United States of America, তে Woodrow Wilson কে গণ্য করা হয় father of public administration হিসেবে। তাঁর “ The Study of Administration ” টি দেখতে পারেন। বলা হয় যে, 

“It is the object of administrative study to discover, first, what government can properly and successfully do, and, secondly, how it can do these proper things with the utmost possible efficiency and at the least possible cost either of money or of energy”. 

Wilson ১৮৮৭ সালে চারটি কোর কনসেপ্ট এর অবতারণা করেন। এ চারটি কনসেপ্ট হলোঃ 

1.Separation of politics and administration 

2.Comparative analysis of political and private organizations 

3.Improving efficiency with business-like practices and attitudes toward daily operations 

4.Improving the effectiveness of public service through management and by training civil servants, merit-based assessment. 

জনপ্রশাসন বা লোকপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের রূপকল্প ও অঙ্গীকার গুলো (ভিশণ)

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জনপ্রশাসনে সেবা প্রদান কার্যক্রমকে আরো দক্ষ, পেশাদারিত্বসম্পন্ন, স্বচ্ছ ও প্রত্যাশিত রূপে নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিসে উচ্চ মানের নীতিগত, পেশাগত এবং মানবসম্পদ সহায়তা প্রদানের জন্য মুখ্য সরবরাহক হওয়ার ভিশন লালন করে। 

অঙ্গীকার (মিশন): 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মানবসম্পদের আকর্ষণ, উন্নয়ন, নিয়োগ এবং সাংগঠনিক ও কার্যগতভাবে একটি দক্ষ ও উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মানবসম্পদ সহায়ক পদ্ধতি দ্বারা একটি যোগ্য ও জবাবদিহিতামূলক পাবলিক সার্ভিস সিস্টেম উন্নয়নে অবদান রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ। 

দায়িত্বাবলি কি কি রয়েছে লোক প্রশাসন মন্ত্রনালয়ে

কার্যবিধিমালা, ১৯৯৬ অনুসারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জন্য কার্যবণ্টনের অধীনে নিম্নোক্ত দায়িত্বসমূহ অর্পণ করা হয়েছে 

১. সিভিল সার্ভিসসমূহের নিয়ন্ত্রণ এবং শর্তাবলি নির্ধারণের নিমিত্ত নীতিমালা প্রণয়ন (নিয়োগপদ্ধতি, বয়সসীমা, যোগ্যতা, কতিপয় এলাকার জন্য এবং লিঙ্গভিত্তিক পদ সংরক্ষণ, স্বাস্থ্যগত উপযুক্ততা, পরীক্ষা, নিয়োগ, পদায়ন, বদলি, প্রেষণ, ছুটি, ভ্রমণ, জ্যেষ্ঠতা, পদোন্নতি, বাছাই, ‘সাপ্রেশান’ অবসর, অবসরভাতা পরিকল্পনা, পুনর্নিয়োগ, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, পেনশন এর শর্তাদি, পদমর্যাদা নির্ধারণ প্রভৃতি)। 

২. নিয়ত পরিবর্তনশীল পরিবেশকে আয়ত্ত করা কিংবা তার সঙ্গে অভিযোজিত হওয়ার নিমিত্ত সিভিল সার্ভিসের সামর্থ বৃদ্ধি করা। 

৩. ন্যায়পরায়ণ, সুবিচারসম্পন্ন এবং স্বচ্ছ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন। 

৪. সংবিধান, আইন, বিধি, প্রবিধান ও বলবৎ সংবিধিবদ্ধ আদেশের মাধ্যমে প্রদত্ত সরকারি কর্মচারীদের অধিকার এবং বিশেষ অধিকার সংরক্ষণ। 

৫. মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত বিষয়াদি সংশ্লিষ্ট চাকরির শর্তাবলি সংক্রান্ত বিধি, প্রবিধিমালা এবং আদেশ সমূহের ব্যাখ্যা প্রদান । 

৬. প্রজাতন্ত্রের কর্মে অবাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানসংক্রান্ত এবং বাংলাদেশের কোনো কার্যে বিদেশিদের কর্মসংস্থান নিয়ন্ত্রণ। 

৭. অসামরিক পদে সম্মানিক জনবল নিয়োগ। 

৮. সার্ভিস এবং পদের শ্রেণিবিন্যাস সংক্রান্ত নীতি এবং এগুলোর মর্যাদা নির্ধারণ।

৯. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ব্যতীত যে-সমস্ত কর্মকর্তা বহির্দেশীয় বাংলাদেশ মিশনে পদায়িত হন তাদের সহ অন্যান্য কর্মকর্তার পদমর্যাদা নির্ধারণ, সচিবালয়-বহির্ভূত পদসমূহকে পদাধিকারভিত্তিক সচিবালয়-অন্তর্ভুক্ত পদমর্যাদা মঞ্জুরিকরণ। 

১০. উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারীদের আত্তীকরণ/কর্মসংস্থান সংক্রান্ত বিষয়াদি। 

১১. নীতিমালা প্রণয়ন সম্পর্কিত সকল বিষয়, ক্যাডার সার্ভিস গঠন এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন ক্যাডার সার্ভিসসমূহকে যথাযথ ব্যবস্থাপনার উপদেশ প্রদান। 

১২. মন্ত্রণালয়/বিভাগে কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত নীতি এবং তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যাদিসহ অন্যসকল বিষয়াদি। 

১৩. নিয়মিতভাবে গঠিত ক্যাডারসার্ভিসের যেকোনোপদে প্রথম নিয়োগ। 

১৪. (ক) বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার এর প্রশাসন (খ) এ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীর প্রারম্ভিক নিয়োগ এবং প্রশাসন (গ) অন্যান্য কর্মকর্তাগণকে ম্যাজিস্টেরিয়াল ক্ষমতা অর্পণ/মঞ্জুর 

১৫. বিদ্যমান নীতিমালা এবং আদেশাবলি অনুসরণপূর্বক উপজেলা, জেলাসহ বিভাগের কর্মকর্তাগণের নিয়োগ ও বদলি। 

১৬. প্রজাতন্ত্রের অধীন সকল সার্ভিস ও পদের নিয়োগ বিধিমালা সম্পর্কীয় বিষয়াদি। 

১৭. দেশে এবং বিদেশে প্রকল্পে এবং চাকরিতে বিশেষজ্ঞ/ পরামর্শক হিসেবে কাজ করার নিমিত্ত সরকারি কর্মচারীদের মনোনয়ন। 

১৮. জাতীয় প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘ এবং এর বহুবিধ সংস্থার চাকরিতে সরকারি কর্মচারীদের মনোনয়ন। 

১৯. সরকারি কার্যাদি উন্নততর এবং সাশ্রয়ীভাবে নির্বাহ করার জন্য প্রশাসনিক গবেষণা, ব্যবস্থাপনা এবং সংস্কার। 

২০. সরকারি অফিসের জনবল কাঠামো ও যন্ত্রপাতি এবং উপকরণাদি পুনবীক্ষণ/পর্যালোচনা ও সংশোধন। 

২১. মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংযুক্ত দপ্তর এবং অধস্তন অফিসের সংগঠন, কার্যাবলি, পদ্ধতি এবং কার্যপ্রণালি পর্যালোচনা/ পুনর্বীক্ষণ। 

২২. সরকারি ফরমসমূহের সহজীকরণ। 

২৩. সচিবালয় নির্দেশমালা সংক্রান্ত বিষয়াদি। 

২৪. জনশক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংযুক্ত দপ্তর এবং অধস্তন অফিসসমূহের অধস্তন পরিস্হিতি পরিদর্শন এবং পর্যালোচনা। 

২৫. বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত কর্পোরেশন, বোর্ড, কর্তৃপক্ষ, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা প্রভৃতির পরিচালনা বোর্ড-এর সদস্য অথবা ব্যবস্থাপনা বোর্ড-এর গভর্ণর হিসেবে কাজ করেন; চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক যে নামেই ডাকা হোক, তেমন পদে নিয়োগ। 

২৬. প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্তগণের (নিয়োগের) শর্তাবলি ধার্যকরণ। 

২৭. মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন সকল কর্মকর্তার প্রেষণ। 

২৮. জাতীয় বেতন স্কেল এর ১ম থেকে ৯ম গ্রেডভুক্ত সকল কর্মকর্তার সচিবালয়ে নিয়োগ এবং তাদের আন্তঃমন্ত্রণালয় বদলি। 

২৯. মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, অন্যান্য মন্ত্রী এবং উপদেষ্টাগণের একান্ত সচিব এবং অধঃস্তন একান্ত সচিব নিয়োগ ও বদলি। 

৩০. এই মন্ত্রণালয়ের সংযুক্ত দপ্তর, অধস্তন অফিস এবং উপদেষ্টা পরিষদ সম্পর্কিত বিষয়াদি 

যেমন : 

(১) বিপিএটিসি, (২) বিসিএস (প্রশাসন) একাডেমি, 

(৩) মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, (৪) সরকারি কর্মচারী কল্যাণ পরিদপ্তর, 

(৫) সরকারি পরিবহণ অধিদপ্তর, (৬) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব এ্যাডমিনিস্ট্রেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট। 

৩১. মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে 

(১) বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় 

(২) জেলাপ্রশাসকের কার্যালয় এবং 

(৩) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সংক্রান্ত বিষয়াদি। 

৩২. এই মন্ত্রণালয়ের সংযুক্ত দপ্তর এবং অধস্তন অফিস সমূহ দ্বারা উন্নতমানের জনমুখী/ নাগরিককেন্দ্রিক সেবা প্রদান নিশ্চিত করা। 

৩৩. শৃঙ্খলা, কার্যপ্রণালি ও তদন্ত, আপিল ও পর্যালোচনা এবং সকল তথ্যসূত্র সম্পর্কিত নীতি। 

৩৪. কর্মকৃতি মূল্যায়ন এর প্রতিস্বাক্ষরকরণ, সংরক্ষণ, বিরূপ মন্তব্যের ওপর জবাব, এর ব্যবহার এবং প্রাসঙ্গিক সকল তথ্যসূত্র সম্পর্কিত নীতি। 

৩৫. গণকর্মচারীদের আচরণ এবং তথ্যসূত্র সম্পর্কিত নীতি। 

৩৬. মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সংযুক্ত দপ্তর ও অধস্তন অফিসে মনোহারী দ্রব্যাদির ব্যবহার ও বিক্রয় সম্পর্কিত নীতি। 

৩৭. অফিস সময়সূচি এবং সরকারি ছুটি ঘোষণা সম্পর্কিত নীতি। 

৩৮. সরকারি কর্মচারীদের কল্যাণ সংক্রান্ত বিষয়াদি; কমিউনিটি সেন্টার, স্টাফ বাস সুবিধা প্রভৃতি কল্যাণ সেবাসমূহের প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা। 

৩৯. সরকার এবং স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা, কল্যাণ এবং যৌথ বিমা তহবিল এবং কল্যাণ মঞ্জুরি’র প্রশাসন এবং ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত বিষয়াদি। 

৪০. অফিসিয়াল এবং আবাসিক টেলিফোন, সেলফোন, ইন্টারনেট, ফ্যাক্স প্রভৃতির প্রাপ্যতা এবং সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও আধা-স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা ও কর্পোরেশনসমূহের এ সম্পর্কিত বিষয়াদি সংক্রান্ত নীতি। 

৪১. দাপ্তরিক পোষাক এবং এর সম্পর্কিত বিষয়াদি সংক্রান্ত নীতি। 

৪২. সরকারি যানবাহনের ব্যবহার, মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত নীতি। 

৪৩. এই মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশন এবং অন্যান্য অবসর সুবিধাদি মঞ্জুরি। 

৪৪. বিভাগীয় পরীক্ষা বিধিমালা প্রণয়ন। 

৪৫. কর্মকর্তাগণের চাকরি-রেকর্ডের ইতিহাস, জ্যেষ্ঠতা তালিকা, হালনাগাদ পদায়ন (নিয়োগ ও প্রেষণ তালিকা) তালিকার প্রস্তুতি ও সংরক্ষণ। 

৪৬. বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি এবং নির্বাচনী বোর্ড-এর গঠন ও কার্যাবলি সংক্রান্ত নীতি। 

৪৭. সরকারি কর্মচারীগণের কর্মজীবন পরিকল্পনা এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি। 

৪৮. সরকারি কর্মচারীগণের আপত্তি (representation) সংক্রান্ত বিষয়াদি। 

৪৯. চাকরি সংক্রান্ত সমিতি/সংস্থা/সংগঠন সম্পর্কিত সমুদয় বিষয়। 

৫০. সরকারি কর্মচারীগণ কর্তৃক নির্বাহিত আইনী ব্যয়ের পুনর্ভরণ। 

৫১. সরকার কর্তৃক কর্মজীবন পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে ব্যবহারের জন্য উপাত্ত/ পরিসংখ্যান-এর সংকলন। 

৫২. সচিবালয় রেকর্ড রুম ও গ্রন্থাগার সংরক্ষণ। 

৫৩. অফিসের কার্যাদিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার। 

৫৪. অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের বাজেট এবং এর নিয়ন্ত্রণ। 

৫৫. বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে সরকারি কর্মচারীগণের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত নীতিমালা। 

৫৬. বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন এর সঙ্গে যোগাযোগ, অন্যান্য দেশ এবং বিশ্বসংস্থার সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা সংক্রান্ত এই মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত বিষয়াদি। 

৫৭. এই মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত বিষয়াদি সম্পর্কিত সকল তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ। 

৫৮. এই মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত বিষয়াদি সংক্রান্ত সকল আইন। 

৫৯. আদালতে গৃহীত ফি ব্যতীত এই মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত যেকোনো বিষয় সম্পর্কিত ফি। 

৬০. কর্মজীবন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার-এর সকল কর্মকর্তা এবং জাতীয় বেতন স্কেল-এর ৫ম গ্রেড থেকে তদূর্ধ্ব গ্রেডভুক্ত অন্যান্য ক্যাডার এর কর্মকর্তাদের ডাটাবেইজ সংরক্ষণ। 

বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয় সম্পর্কিত বিষয়াদিঃ 

১. সংবিধান এবং অন্যান্য আইনের অধীনে কর্মসম্পাদনে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনকে সহায়তা করা। 

২. বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয় এবং এর ‘জোনাল’ কিংবা আঞ্চলিক প্রশাসনিক ক্ষেত্রের কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রশাসন ও নিয়ন্ত্রণ। 

৩. এই সচিবালয়ের ওপর ন্যস্ত বিষয়সমূহ সংক্রান্ত সকল আইন। 

৪. এই সচিবালয়ের ওপর ন্যস্ত বিষয়সমূহের যে কোনোটির ওপর তদন্ত এবং পরিসংখ্যান। 

৫. আদালতে গৃহীত ফি ব্যতীত এই সচিবালয়ের ওপর ন্যস্ত বিষয়সমূহের যেকোনো বিষয়ের ওপর গ্রহণীয় ফি। 

মোদ্দা কথায়, সরকারের পলিসি প্ল্যানিং থেকে পলিসি ফর্মুলেশন, সরকারি প্রশাসনের রক্ষনাবেক্ষন এবং ম্যানেজমেন্ট ,রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আইন ইত্যাদি হচ্ছে লোক প্রশাসনের ফোকাস এরিয়া। মোটা দাগে বলতে গেলে লোক প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সরকার এবং সরকারের কার্যক্রমের এমন কোন বিশেষ জায়গা নেই যেটি লোক প্রশাসনের বহির্ভূত। যেকোন প্রতিষ্ঠানের সফলতা / ব্যর্থতা নির্ভর করে একজন প্রশাসকের উপরে। 

 সংগ্রহে→ 

ফয়সাল লোকপ্রশাসন 

৪৪ তম সমাআবর্তন 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

Next Post Previous Post